a story lurks in every corner...

মহালয়া ২০১৯

মহালয়ার ভোর, মানে দেবীপক্ষের শুরু। সাড়ে তিনটার এলার্ম মোবাইলে সেট করা ছিল। অ্যালার্মের ঘণ্টা বাজতেই দীপ উঠে স্নান সেরে নিল। আমার তখনও ঘুম ভাঙেনি। চারটের সময় জিতেন আমায় ডেকে তুলে দিল। 'কিরে উঠবি না? দক্ষিণেশ্বর যেতে হবে তো।' ঘুমে ভরা চোখ খুলছি আর কানে আসছে রেডিওতে চালানো বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী। সেই ছোটবেলা থেকে রেডিওতে মহালয়ার ভোরে শুনে বড় হয়েছি। ওদিকে রেডিও চলছে আর এদিকে আমরা সবাই তৈরি। ইতিমধ্যেই অনিন্দ্য ফোন করে জানালো যে সে আমাদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে।


সাড়ে চারটের মধ্যে আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছি। দক্ষিণেশ্বর পৌঁছাতে লেগেছে মাত্র 15 মিনিট। বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে পুরো ফাঁকা। সাঁই সাঁই করে গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে গেলাম। কিন্তু আলম্বাজার পৌঁছে দেখছি গাড়ি reroute করে দিয়েছে। এগিয়ে গিয়ে গাড়ী ঘুরিয়ে রেলওয়ে কলোনির ভেতরে পার্কিংয়ের জায়গা। সব দিকে জল আর কাদা। গাড়ি রাখার ব্যবস্থা একদম ভালো লাগলো না। যাইহোক, কোনমতে একটা জায়গা দেখে গাড়ি সাইড করে আমরা বেরোলাম।




ভেবেছিলাম ভোরবেলা যাচ্ছি, অল্প কিছু লোকজনের মধ্যে গঙ্গা স্নান করে ফিরে আসবো। কিন্তু কোথায়! ওখানে জনপ্লাবন নেমেছে। লোকের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। ঘাটের পাশেই জুতো রাখার স্টল। সেখানে আমাদের জুতো চটি রেখে আমি আর অনিন্দ্য সিঁড়ি দিয়ে জলে নেমে গেলাম। সিডি ভর্তি কাদা। তলার স্টেপগুলো বেশ slippery। তাও আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে দুজনেই জলে নেমে গেলাম। ভোরের ঠান্ডা গঙ্গাজল গায়ে লাগিয়ে বেশ ভালই লাগলো। দুজনেই তিনটে করে ডুব দিলাম। ঘুরে দেখি জিতেন আমাদের ছবি তুলেই চলেছে। আমাদের ডুব দেয়া হয়েছে কি সিঁড়ির ওপর থেকে একজন ভদ্রমহিলা চেঁচিয়ে বললেন, 'আপনাদের হয়ে গেলে উঠে পড়ুন। এবার আমরা নামব'। দুজনেই আবার সাবধানে উঠে এলাম। 















সকালবেলা দক্ষিণেশ্বর গেলে আমরা নিয়ম করে কচুরি, ছোলার ডাল আর পরে মিষ্টি খেয়ে আসি। সেদিনও আমরা তাই করলাম। মন্দির থেকে বেরিয়ে সোজা কচুরি স্টলে চলে গেলাম।সবাই মিলে জমিয়ে কচুরি খাওয়া হলো আর সাথে হলো প্রচুর আড্ডা। দেবীপক্ষের শুরু খুব ভালভাবে হলো আমাদের। মার কাছে প্রার্থনা যেন সারা বছর টাও এভাবেই ভালো ভাবে কাটাতে পারি আমরা সবাই। সবাই ভালো থাকুক। সবারই যেন মঙ্গল হয়।




No comments:

Post a Comment